এ মাসেই শুরু হচ্ছে শিক্ষক নিবন্ধন মৌখিক পরীক্ষা, করণীয় জানুন

এনটিআরসিএ


এনটিআরসিএ’র পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন শাখার এক কর্মকর্তা  বলেন, ‘১৮তম নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ২৭ অক্টোবর থেকে পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। শিগগিরই মৌখিক পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।’

মৌখিক পরীক্ষার নম্বর
শিক্ষক নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষায় মোট নম্বর ২০। একাডেমিক পরীক্ষার ফলাফলের জন্য বরাদ্দ ১২ নম্বর এবং ভাইভা বোর্ডে থাকে ৮ নম্বর। স্কুল ও কলেজ উভয় ক্যাটাগরিতেই পাস নম্বর ৪০ শতাংশ পেতে হয়। ভাইভার নম্বর সনদে উল্লেখ থাকলেও তা জাতীয় মেধাতালিকায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে গণনায় নেওয়া হয় না। অনেকেই মৌখিক পরীক্ষায় পাস নম্বর নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। ভাইভায় অকৃতকার্য হওয়ার আশঙ্কা খুব কম। যদি না কাগজপত্রে তথ্যগত কোনো অসামঞ্জস্য থাকে। তবে ভাইভায় একদম কিছু না পারলে ফেল করার নজিরও আছে। পাস নম্বরের কথা মাথায় না নিয়ে অন্যান্য ভাইভার মতো সাধারণ কিছু প্রস্তুতি ও বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি ভালোভাবে নিতে পারলেই চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হওয়া যাবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
প্রার্থীর আবেদনের সময় দেওয়া তথ্য ও ভাইভায় দেখানো কাগজপত্রের মধ্যে অমিল থাকলে প্রার্থীকে ফেল করানো হয়। তথ্য জালিয়াতি বা মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করলে প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও বিধান আছে। তাই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপনে সতর্ক থাকা জরুরি। মৌখিক পরীক্ষায় যেসব কাগজপত্র চাওয়া হয়, সেগুলো হলো মৌখিক পরীক্ষার মূল প্রবেশপত্র, সব সনদের মূল কপি, স্নাতক পর্যায়ের মূল নম্বরপত্র বা মার্কশিট, সহকারী শিক্ষকদের ক্ষেত্রে আবেদনে উল্লেখিত ঐচ্ছিক বিষয়ের জন্য স্নাতক পর্যায়ের প্রবেশপত্র, বিশেষ কোনো প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে সনদের মূল কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি ও কর্তৃপক্ষের চাওয়া যেকোনো সনদের মূল কপি।

মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডসংক্রান্ত তথ্য
সাধারণত তিনজনের অধিক সদস্য নিয়ে প্রতিটি মৌখিক পরীক্ষার বোর্ড গঠিত হয়। প্রতি বোর্ডে একজন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ বা অভিজ্ঞ শিক্ষক থাকবেন। এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান ছাড়া বাকি সব বোর্ডে উপসচিব বা যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাসহ এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা থাকবেন।

বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির জন্য করণীয়
শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভার ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ। কারণ, ভাইভা বোর্ডে বেশির ভাগ প্রশ্ন করা হয় ঐচ্ছিক বিষয়ের বিভিন্ন পাঠ, নিবন্ধনের লিখিত সিলেবাস ও লিখিত প্রশ্ন থেকে। বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দেওয়ার জন্য স্নাতক পর্যায়ের আব্যশিক পত্রগুলো ভালোভাবে পড়া উচিত। এ ছাড়া আপনি যে পর্যায়ের শিক্ষক হতে যাচ্ছেন, সেই পর্যায়ে আপনার সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বইয়ের ওপর ভালো দক্ষতা থাকা উচিত। এখানে মনে রাখা জরুরি, আপনি যে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাবেন, সেই বিষয়ে অবশ্যই আপনাকে যথেষ্ট দক্ষতা দেখাতে হবে।
বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ছাড়াও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়, বিভিন্ন আলোচিত ঘটনা, বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু–সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, আপনার নিজ জেলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ও অর্থনৈতিক সমীক্ষার তথ্য জিজ্ঞাসা করা হতে পারে। এ ছাড়া ভিশন, রূপকল্প, এসডিজি, শিক্ষাসম্পর্কিত বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সাফল্য ও মেগা প্রকল্প থেকেও প্রশ্ন আসতে পারে।

চূড়ান্ত ফলাফল
১৮তম ভাইভা শেষে প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ও সনদের নম্বর যোগ করে প্রার্থীকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হবে। ভাইভায় পৃথকভাবে অকৃতকার্য হলে প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে অকৃতকার্য ঘোষণা করা হবে। চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ফলাফল ঘোষণা করে তাঁদের বিদ্যমান জাতীয় মেধাতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। প্রত্যেক প্রার্থী এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে রোল নম্বর দিয়ে মেধাক্রম ও সিরিয়াল নম্বর দেখতে পারবেন। শিক্ষক হিসেবে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ একটি শিক্ষক নিবন্ধন সনদ প্রদান করবে। এটি দিয়ে একজন প্রার্থী ৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগে প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিযোগিতা করে শিক্ষক হওয়ার সুযোগ পাবেন।
পরে প্রকাশিত পূর্বে প্রকাশিত
No Comment
Add Comment
comment url